আলুর উপকারীতা
আলুর পরিচিতি আলু Solanaceae গোত্রের অন্তর্ভুক্ত একটি কার্বোহাইড্রেট ও কন্দযুক্ত শস্য। এর বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum। বিশ্বে উচ্চহারে অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত শস্যের তালিকায় আলুর স্থান চতুর্থ। আলুর জন্মস্থান পেরু হলেও বর্তমানে আলুর শতকরা ৯৯ ভাগই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীন প্রথম স্থান ও ভারত দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। আলুতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আলু আমাদের অতি পছন্দের একটি সবজি বা খাদ্য। বাজারে বারোমাস কিনতে পাওয়া যায় আলু। এর রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। অনেক সময় আমাদের প্রধান খাদ্য ভাতের বিকল্প হিসেবেও কাজ করে।
আলুর পুষ্টি উপাদান
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য আলু। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুতে উচ্চমানের ক্যালরি আছে প্রায় ৯৬ কিলোক্যালরি। ৬০ গ্রাম আলু ভাজিতে প্রায় ২৩৫ কিলোক্যালরি এবং ৪০ গ্রাম আলুর চিপসে প্রায় ২০৫ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। আলুতে স্বল্প পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন ‘এ', ‘বি' ও ‘সি'। আলুর খোসায় খাদ্য আঁশ আছে ১০০ ভাগ। আরো আছে আয়রন, পটাশিয়াম এবং কলিন। এতে ভিটামিন ‘বি' আছে কিছু পরিমাণে। তাই খোসাসহ আলু রান্না করলেও তা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
আলুর গুনাগুন
আলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। একটি মধ্যম আকৃতির (১৫০গ্রাম) আলুর ত্বকে প্রায় ২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'সি' আছে। এছাড়া আলুতে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি, ফলেট ও আয়রন আছে।
প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে আলু খাওয়া অনেক উপকারী কারণ এতে রক্তচাপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত আলু খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীর মুটিয়ে যায়।
আলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ রয়েছে যা মন ভালো রাখার জন্য কার্যকরী দুটি উপাদান সেরেটোনিন ও ডোপামিন নামক নিওট্রান্সমিটার গঠনে সহায়তা করে। নিওট্রান্সমিটার মস্তিষ্কে অনুভূতি আদান প্রদান করে থাকে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে মন ভালো করতে সহায়তা করে।
আলুতে গ্লুকোজ, অক্সিজেন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এমিনো এসিড, ওমেগা-৩ ও অন্যান্য ফ্যাটি এসিড আছে যা মস্তিষ্ক সচল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
আলুতে ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস ইত্যাদি রয়েছে যা ত্বকের জন্য জরুরী। আলু বেটে কিংবা আলুর রস ত্বকে লাগালে বিভিন্ন দাগ, র্যাশ ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া রোদে পোড়া ভাবও দূর করতে সহায়তা করে আলুর রস।
প্রয়োজনীয়তা- কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালরিসমৃদ্ধ আলু আমাদের শারীরিক শক্তির উৎস। ভিটামিন-'সি', ভিটামিন-'বি'৬, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফাইবারে সমৃদ্ধ থাকার কারণে আলু আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি খুব সহজেই মেটাতে পারে।
মিষ্টি আলুতে ক্যালরি খুব কম এবং প্রায় ফ্যাট নেই বললেই চলে। তাই যাদের ক্ষেত্রে ক্যালরি-ফ্যাটে সমস্যা তারাও আলু খেতে পারবে। আলুতে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন-'এ', যা খুবই প্রয়োজনীয়। এনার্জি বা শক্তি উৎপাদক হিসেবে আলু খুবই নির্ভরযোগ্য একটি খাদ্য।
আলু থেকে প্রাপ্ত শক্তি লাইকোজেন হিসেবে মাংসপেশি ও লিভারে সঞ্চিত থাকে। তাই শারীরিক ব্যয়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ করে খেলোয়াড়দের জন্য আলু একটি উত্তম খাদ্য। আলু কম মাত্রায় সোডিয়ামযুক্ত, প্রায় ফ্যাটমুক্ত ও সহজে হজমযোগ্য হওয়ার কারণে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা যায়।
স্টমাক আলসার বা পাকস্থলীর ক্ষত নিরাময়ে ও কোলন বা অন্ত্রের ফুলে যাওয়ায় আলু খুবই উপকারী। উচ্চমানের ফাইভার থাকায় হেমোরয়েড বা অর্শ্ব রোগেও আলু খুব সাহায্য করে থাকে। উচ্চমানের ভিটামিন-'এ'-এর সমৃদ্ধতার কারণে গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি ও এপিথেলিয়াল টিস্যুযুক্ত অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে আলু সাহায্য করতে পারে। আলু রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি একটি উপকারী খাদ্য।
হার্ট-অ্যাটাক বা স্ট্রোক প্রতিরোধেও আলু সাহায্য করে থাকে। পটাশিয়াম থাকার কারণে আলু আমাদের দেহ কোষে ইলেক্ট্রোলাইট ও ফ্লুইডের সমতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। হার্টের স্বাভাবিক কাজকর্মে সাহায্য করার পাশাপাশি ব্লাডপ্রেসারও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
পরামর্শক,
ডাঃ সেকেন্দার আলী
০১৭১৭- ৯১০৮৯১
হ্যানিম্যান হোমিও হল
তিলকপুর নতুন বাজার, তিলকপুর
ভাইস প্রিন্সিপ্যাল
নওগাঁ হোমিওপ্যাথিক মেডিকাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, নওগাঁ।
To Know more information contact with us or make a call in 01911-977800